“সাতক্ষীরায় জামায়াতে যোগদান ঘিরে বিতর্ক, বিএনপির প্রতিবাদ”

সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ফিংড়ীতে ১৫ জনের জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের খবর ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জেলা বিএনপি বলছে, সংবাদে যাদের বিএনপি নেতাকর্মী বলা হয়েছে, তারা কখনোই দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। অন্যদিকে, জামায়াত নেতারা দাবি করছেন, ইসলামী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই ওই ব্যক্তিরা দলে যোগ দিয়েছেন।

গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সদর উপজেলার ব্যাংদহা কাছারিবাড়ি জামে মসজিদে সিরাতুন্নবী মাহফিল শেষে ওই ১৫ জন জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। তাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন জামায়াত নেতারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জামায়াতের নেতারা।

রোববার রাতে জামায়াতের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের বলা হয়, ফিংড়ী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. আবু সালেকের নেতৃত্বে যোগদানকারীদের মধ্যে আছেন মো. আবুল কালাম, মো. আ. সবুর, মো. হানিফ হোসেন, মো. নূর ইসলাম, মো. উজ্জ্বল হোসেন, মো. সেলিম হোসেন, মো. ইব্রাহিম (বাবু), মো. ইনামুল হক, মো. আব্দুল কালাম, মো. আবু সালেক, মো. হযরত আলী, মো. কুরবান আলী, মো. মোতালেব, মো. রুহুল কুদ্দুস ও মো. আফজাল হোসেন।

এই ঘটনার পর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে লিখিত বিবৃতি দেয় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু। বিবৃতিতে বলা হয়, সংবাদে যাদের বিএনপির নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু জানান, তারা অতীতে বিভিন্ন সুবিধাভোগী ছিলেন। সম্প্রতি বিএনপিতে প্রবেশের চেষ্টা করলেও স্থানীয় নেতৃত্ব তাদের কোনো গুরুত্ব দেয়নি। ফলে তারা বিকল্প রাজনৈতিক আশ্রয় খুঁজেছেন। অথচ যাচাই-বাছাই ছাড়াই গণমাধ্যমে তাদের বিএনপি নেতা বলা হয়েছে, যা দুঃখজনক। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, তারা কোনো সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না।

বিবৃতিতে জেলা বিএনপি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে সংবাদ প্রচারের আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই করার আহ্বান জানায়।

অন্যদিকে, জামায়াত নেতাদের ভাষ্য, নতুন যোগদানকারীরা ইসলামী আদর্শে বিশ্বাস স্থাপন করে দলে এসেছেন। স্থানীয় জামায়াতের নায়েবে আমির মাস্টার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মানুষ এখন ইসলামী রাজনীতিতে আস্থা রাখছে। এই যোগদান তারই প্রতিফলন।’

এদিকে, এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিএনপির অনেক সমর্থক বলছেন, সংবাদটি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ছড়ানো হয়েছে। তবে জামায়াতপন্থিদের দাবি, বিএনপির ভেতরে বিভক্তির কারণেই এ ধরনের যোগদান বাড়ছে।

সাতক্ষীরায় বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা থাকলেও এবারের ঘটনাটি ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। জেলা বিএনপির প্রতিবাদে স্পষ্ট হয়েছে, তারা এই ১৫ জনকে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। তবে যোগদানকারীদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং জামায়াতের স্বীকৃতির ফলে ঘটনাটি স্থানীয় রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

Check Also

প্রশাসনের আশ্বাসে হেফাজতের অবরোধ প্রত্যাহার

৮ অক্টোবর ২০২৫ চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় চলমান অবরোধ কর্মসূচি প্রশাসনের আশ্বাসে প্রত্যাহার করেছে হেফাজতে ইসলাম। …

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।