গাজা যুদ্ধবিরতি: ইসরায়েলের দখলদারির অবসান ছাড়া স্থায়ী শান্তি নেই

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির ফলে অবকাশ পাওয়া সাধারণ ফিলিস্তিনি নাগরিকেরা স্বস্থির মুহূর্ত উপভোগ করতে শুরু করেছে—বাচ্চাদের মুখে হাসি ফেরা, পরিবারগুলো নিজ ঠিকানায় ফিরে যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়া এবং ত্রাণবাহী কনভয়ে ঢোকার প্রস্তুতি নেয়া সবই এ শান্তি প্রক্রিয়ার কার্যকর হওয়া প্রতিফলন। তবে এই শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না—এ প্রশ্নটি এখনো অনুত্তরিত।

উল্লেখ্য, চলতি যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি বহু আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীর সহায়তায় সম্পন্ন হয়েছে; যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ও অন্তত আটটি আরব ও মুসলিম দেশের অবদান এতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। চুক্তির নকশা ও ধারায় উদ্বেগের কারণও দেখা দিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ২০ দফার খসড়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং কিছু পরিবর্তনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রবেশের অভিযোগও রয়েছে। তবু বিভিন্ন পক্ষ এবং চাপে থাকা হামাস চূড়ান্তভাবে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে, ফলে চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর করার কাজ শুরু হয়েছে।

চুক্তির মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলোতে ফিরে যাচ্ছে; বাস্তুচ্যূতদের অনেকেই নিজের বাড়ি ফিরে যেতে শুরু করেছে; ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ বাড়ানো হচ্ছে; এবং বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়াও চালু—ইস্রায়েলি জিম্মিদের মুক্তির কাঠামোর বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে রিপোর্টারদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে এটিই—যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারি অব্যাহত থাকবে, ততদিন স্থায়ী শান্তির সম্ভাবনা দুর্বলই থাকবে। দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করতে, লেখায় বলা হয়েছে, গাজা ও পশ্চিম তীরের ওপর ইসরায়েলি দখলদারি ও সম্বন্ধীয় অবরোধ, সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে নীতিগত ও কাঠামোগত সমাধান প্রয়োজন। ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে—আগেও বহু যুদ্ধবিরতি হয়েছে কিন্তু চুক্তি লঙ্ঘনের কারণে সেগুলো টেকসই হয়নি; তাই বর্তমান চুক্তি বাস্তবায়ন ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণই এখন মূল পরীক্ষা।

গাজার দুই বছরের সংঘাত ও জনগণের কষ্ট, ধ্বংসস্তুপে ফিরে যাওয়ার ঝুঁকি ও মানবিক বিপর্যয়—এসবের প্রেক্ষাপটে লেখাটি বলছে: ফিলিস্তিনি জনগণের দীর্ঘ দিনের স্বাধীনতা আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম বন্ধ হবে না এবং বাস্তবিক স্থায়ী শান্তির জন্য দখলদারি বন্ধকে অপরিহার্য শর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Check Also

রফতানি-রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতি, দুই মাসে উদ্বৃত্ত ৪৮ কোটি ডলার

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বাংলাদেশে বৈদেশিক লেনদেনে উদ্বৃত্ত হয়েছে ৪৮ কোটি ডলার, যা …

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।