সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার বিভিন্ন নদীতে অবাধে চলছে মা-ইলিশ শিকার। প্রজনন মৌসুমে ইলিশ রক্ষায় জেলেরা নদীতে নামা নিষিদ্ধ হলেও তা মানছেন না অনেকেই। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানেও জেলেদের থামানো যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাংগাশিয়া, আঙ্গারিয়া, লেবুখালী ও মুরাদিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১১টি পয়েন্টে প্রতিদিন রাতভর চলছে ইলিশ ধরা। জেলেরা মোবাইল ফোনে একে অন্যকে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে প্রশাসনের উপস্থিতি সম্পর্কে আগেভাগে জানতে পারেন। ফলে অভিযান শুরু হলে তারা দ্রুত পালিয়ে গিয়ে পাশের বাউফল, মির্জাগঞ্জ বা বাকেরগঞ্জের খালে আশ্রয় নেন। অভিযান শেষ হলে আবার নদীতে নেমে মাছ ধরেন।
এভাবে গোপনে ধরা ইলিশ পাচার হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বাজার ও পাইকারদের কাছে। আঙ্গারিয়া বন্দর, হাজিরহাট, পাতাবুনিয়া বাজার ও লেবুখালী ফেরিঘাটসহ অন্তত ১১টি ঘাটে ইলিশ মজুত করছেন পাইকাররা। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে এসব এলাকায় ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে।
আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান সোহরাব বলেন, প্রশাসনের দুর্বলতা ও সমন্বয়ের অভাবে মা-ইলিশ শিকার বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে মৌসুমি জেলেরা নিয়ম মানতে নারাজ।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৪ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ৪টি নৌকা ও প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে পাঁচজন জেলেকে, যাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এক কিশোরকে সতর্ক করে মুচলেকায় মুক্তি দেওয়া হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, জনবল ও দ্রুতগামী যানের সংকট থাকলেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই কিছু জাল জব্দ করা সম্ভব হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মো. এজাজুল হক বলেন, জেলেরা কৌশল পাল্টে পালিয়ে গেলেও অভিযান থেমে নেই। স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।