মিয়ানমার সীমান্তের অন্তত সাতটি রুট ব্যবহার করে বাংলাদেশে ঢুকছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র। গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, এসব অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত অন্তত পাঁচটি সংঘবদ্ধ চক্র, যাদের অধিকাংশ সদস্য কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরভিত্তিক। এসব অস্ত্র সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে।
সম্প্রতি র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছে। বিজিবি জানিয়েছে, মিয়ানমার সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং গত তিন মাসে ২২টির বেশি অস্ত্র চালান আটক করা হয়েছে। কক্সবাজার, নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফসহ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে অস্ত্র আসছে। এসব রুটের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছে আরসা, আরএসও, হালিম গ্রুপসহ সশস্ত্র রোহিঙ্গা চক্রগুলো। এদের মধ্যে হালিম গ্রুপ এখন সবচেয়ে সক্রিয়। ক্যাম্পের ভেতর ‘নৌকার মাঠ’ এলাকায় তাদের ঘাঁটি রয়েছে বলে জানা গেছে।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর মিয়ানমারে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি দখল করে নেয়। এতে ফেলে যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ পরে পাচার হয়ে আসে বাংলাদেশে। রোহিঙ্গা চক্রগুলো এই অস্ত্র মজুদ ও বিক্রি করছে দেশের ভেতরের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান চালানো হলেও সীমান্তের ভেতরে অস্ত্র প্রবেশ রোধে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এভাবে মাদক, মানবপাচার ও অস্ত্র ব্যবসায় একযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা চক্রগুলো, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।