তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী রোববার (১৯ অক্টোবর) দেশের প্রতিটি জেলা শহরের মহাসড়কে তিন ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’। সংগঠনটির আহ্বায়ক মাসুদ রানা সৌরভ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ রানা বলেন, “জুলাই যোদ্ধারা হামলার শিকার হয়েছে। আমাদের জীবনের ঝুঁকি, রক্ত, আত্মত্যাগের স্বীকৃতি যদি না দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ এই রাষ্ট্রের জন্য বিপ্লবী হতে আগ্রহী হবে না।” তিনি আন্দোলনে সাধারণ জনগণকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
তিন দফা দাবি
১. জুলাই শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।
২. আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী যোদ্ধাদের ‘বীর’ মর্যাদা দিয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের রোডম্যাপ ঘোষণা।
৩. আহতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত হয়রানি বন্ধে দায়মুক্তি ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন।
পূর্বের ঘটনার প্রেক্ষাপট
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় জুলাই যোদ্ধাদের একটি অংশ প্রবেশের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীরা মঞ্চ এলাকায় প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকেন এবং পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সংসদ ভবনের ১২ নম্বর গেট এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনের আশপাশে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ ও এবিপিএন সদস্যরা লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সমর্থন ও প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বেশ কিছু সংগঠন। তারা দাবি করেছে, জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা একটি পরিকল্পিত দমন-পীড়নের অংশ। তারা এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ের আহ্বান জানান।
জুলাই যোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রোববারের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে। তবে যদি প্রশাসন বাধা দেয়, তবে পরবর্তী সময়ে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা।