আন্তর্জাতিক ডেস্ক📅 ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ইতালির রোমে অবস্থিত প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের গৌরবময় স্মৃতিস্তম্ভ কলোসিয়ামে অবশেষে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে ‘কমোডাস প্যাসেজ’ নামের একটি গোপন সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গপথটি ব্যবহার করেই রোমান সম্রাটেরা গোপনে গ্ল্যাডিয়েটরদের লড়াই উপভোগ করতেন, জনতার চোখ এড়িয়ে।
এই সুড়ঙ্গের নামকরণ করা হয়েছে ইতিহাসের কুখ্যাত ও বিতর্কিত রোমান সম্রাট কমোডাসের নামে, যিনি তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য berোলিত। ধারণা করা হয়, এই সুড়ঙ্গেই একবার তিনি হত্যাচেষ্টার শিকার হন।
ইতিহাস ও আবিষ্কার
প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় জানা গেছে, কলোসিয়াম নির্মাণের প্রথম দিককার নকশায় এই সুড়ঙ্গটির কোনো স্থান ছিল না। তবে পরবর্তীতে সম্রাটদের নিরাপত্তা ও গোপন চলাচলের সুবিধার্থে খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুতে এটি নির্মাণ করা হয়। সুড়ঙ্গটি কলোসিয়ামের মঞ্চের নিচ দিয়ে সরাসরি সম্রাটদের ব্যক্তিগত কক্ষ বা রাজপ্রাসাদের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
১৯ শতকের শেষভাগে সুড়ঙ্গটির অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। দীর্ঘ গবেষণা ও সংরক্ষণ কাজ শেষে ২০২৫ সালে এটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হলো।
‘দ্য গ্ল্যাডিয়েটর’ সিনেমা ও কমোডাস
কমোডাস চরিত্রটি আরও বিখ্যাত হয়ে ওঠে ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হলিউডের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘দ্য গ্ল্যাডিয়েটর’-এর মাধ্যমে। সেই সূত্র ধরেই এই সুড়ঙ্গকে ‘কমোডাস প্যাসেজ’ নামে অভিহিত করা হয়।
ভেতরের স্থাপত্য ও সৌন্দর্য
সুড়ঙ্গটির দেয়াল একসময় মার্বেল পাথরে মোড়ানো ছিল এবং প্রাচীন শিল্পীরা সেখানে ফুটিয়ে তুলেছিলেন গ্ল্যাডিয়েটর যুদ্ধ, পশুদের লড়াই এবং পৌরাণিক কাহিনী। তবে সময়ের ব্যবধানে এসব অলঙ্করণ অনেকটাই মুছে গেছে। এখন দর্শনার্থীদের জন্য থ্রিডি ভিডিও ও ভার্চুয়াল ট্যুরের মাধ্যমে সেই ঐতিহাসিক দৃশ্যপট উপস্থাপন করা হচ্ছে।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের মত
প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক বারবারা নাজ্জারো বলেন,
“প্রথমে এই পথটি পরিকল্পনায় ছিল না। কিন্তু কলোসিয়াম উদ্বোধনের পর সম্রাটরা সাধারণের সংস্পর্শ এড়াতে এটি নির্মাণ করেন। এটি একটি নিখুঁত স্থাপত্যকর্ম, এবং এখন মানুষ ইতিহাসকে স্পর্শ করতে পারবে নিজের চোখে দেখে।”