২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নজিরবিহীন ফল বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন অকৃতকার্য ও আশানুরূপ ফল না পাওয়া শিক্ষার্থীরা। তারা চার দফা দাবি উত্থাপন করে আগামী রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে গণজমায়েতের ডাক দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই কর্মসূচির প্রচার ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
চলতি বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২০০৪ সালে পাসের হার ছিল ৪৭.৭৪ শতাংশ। শুধু পাসের হারই নয়, জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হারসহ ফলাফলের প্রতিটি সূচকে বড় ধস দেখা গেছে। এতে অসংখ্য শিক্ষার্থী হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে। তবে আন্দোলনের আয়োজকদের বিস্তারিত পরিচয় এখনো প্রকাশ্যে আসেনি।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত চার দফা দাবি হলো:
১. সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আয়োজন – অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য দ্রুত নতুন পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
২. খাতা পূর্ণাঙ্গ পুনর্মূল্যায়ন – শুধু নম্বর পুনর্গণনা নয়, এমসিকিউ, সিকিউ ও প্র্যাকটিক্যাল—খাতার সব অংশ নতুনভাবে মূল্যায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
৩. নম্বর বিভাজন প্রদর্শন – মার্কশিটে প্রতিটি বিষয়ের এমসিকিউ, সিকিউ ও ব্যবহারিক অংশের নম্বর আলাদাভাবে প্রকাশ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
৪. সম্মিলিত পাসের ব্যবস্থা – সিকিউ ও এমসিকিউ মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে পাসের সুযোগ চালু করার দাবি তুলেছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন বোর্ড ও বিভাগভিত্তিক ফলাফলেও বড় ধরনের পতন ঘটেছে। কুমিল্লা বোর্ডে সর্বনিম্ন পাসের হার ৪৮.৮৬ শতাংশ এবং সিলেট বোর্ডে ৫১.৮৬ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ।
গ্রুপভিত্তিক ফলাফলে সবচেয়ে ভালো করেছে বিজ্ঞান বিভাগ, যেখানে পাসের হার ৭৮.৭২ শতাংশ। তবে মানবিক বিভাগে পাসের হার সবচেয়ে কম—মাত্র ৪৮.২৩ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই ফল তাদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলেছে।
ফলে, সংশ্লিষ্ট দাবিগুলো মেনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সারাদেশেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় ধরনের বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।