১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান বলেছেন, ইনসাফভিত্তিক ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে ‘জুলাই সনদ’ একটি স্মরণীয় ইতিহাস হয়ে থাকবে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ফারুক বলেন, “জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা একটা স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।” তিনি জানান, সনদে সংসদ সদস্যদের নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অধিকার, বিরোধী দলের সদস্যদের ডেপুটি স্পিকার ও বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির প্রধান হওয়ার বিধান, প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনর্বহাল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বহু বিষয় সংবলিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এই দাবিগুলো বহুদিন ধরে জনগণের আন্দোলন-সংগ্রামে উঠে এসেছে এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এগুলো জনগণের আকাঙ্ক্ষায় রূপ নেয়। আগস্ট/জুলাই জ-national সনদে স্বাক্ষর কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি আমাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্টের প্রকাশ।”
লায়ন ফারুক এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, যারা বিভিন্ন কারণে সনদ স্বাক্ষরে অনীহা প্রকাশ করছেন, তারা সময়ের সঙ্গে তাদের অবস্থান থেকে সরে এসে ঐতিহাসিক এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন। তিনি জনগণের জন্য সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটানোই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেন এবং সবার মিলিত প্রচেষ্টায় তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
সনদে অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি মূল প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশগুলো ফারুক ব্যাখ্যা করে বলেন—সরকার, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কার, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা, এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদের ভেতর থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিধান।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক মহলগুলো সনদকে ঐতিহাসিক ঘোষণা করলেও অনেকে কিভাবে ও কখন এ প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়িত হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছেন। লায়ন ফারুক বলেছেন, সনদ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই তাদের অগ্রাধিকার—এবং তা বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সংলাপ ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ হবে বলে জানান তিনি।